সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
২০ নভেম্বরের মধ্যে মন্দারমণির ১৪০টি হোটেল ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল জেলা প্রশসান। ইতিমধ্য়ে ৩০টি হোটেলকে চিহ্নিতও করেছে তারা। বিষয়টি জানতে পেরে যারপরনাই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নবান্ন সূত্রের খবর, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা প্রশাসনের এহেন নির্দেশ শোনার পর স্তম্ভিত হয়ে যান। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা না করে জেলা প্রশাসন একতরফাভাবে কী করে এত বড় সিদ্ধান্ত নিল, তা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে অবিলম্বে জেলা প্রশাসনকে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশও দিয়েছেন।
দিঘার তুলনায় মন্দারমণি অনেকটাই নিরিবিলি। ফলে ছুটি পেলেই অনেকের গন্তব্য থাকে মন্দারমণি। বছরভরই পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে। সেই সূত্রে মন্দারমণিতে হোটেল সংখ্যাও নেহাত কম নয়। সম্প্রতি ১৪০ টি বেআইনি হোটেল ভেঙে ফেলার নোটিস জারি করে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের এহেন সিদ্ধান্তের ফলে বিপাকে পড়েন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
হোটেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন হোটেল ব্যবসার সঙ্গে লক্ষাধিক মানুষের রুজি রোজগার জড়িয়ে আছে। এখন এগুলি ভেঙে দিলে তাঁদের ভবিষ্যত অথৈ জলে পড়বে। মন্দারমণি হোটেল ইয়ারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মির মমরেজ আলি জানিয়েছেন সরকার পক্ষের কাছে আবেদন থাকবে এত লক্ষ লক্ষ মানুষের রোজগার তারা হারাবে পুনর্বিবেচনা করে দেখা হোক।
সূত্রের খবর, বিষয়টি জানার পরই এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। প্রতিটি হোটেলে গড়ে ১০ জন করে কাজ করলে ১৪০টি হোটেলের সঙ্গে ১৪০০ পরিবার জড়িয়ে রয়েছে। এভাবে রাতারাতি সকলকে পথে বসানোর সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন।
১৪৪টি হোটেলের মধ্যে শুধু দাদনপাত্রবাড়েই রয়েছে ৫০টি হোটেল। সোনামুই এলাকায় রয়েছে ৩৬টি। সিলামপুরে ২৭টি, মন্দারমণিতে ৩০টি এবং দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুরে একটি লজ রয়েছে। উপকূলবিধি না মেনেই সিআরজেড (কোস্টাল রেগুলেশন জোন) এলাকার মধ্যে হোটেলগুলি গড়ে তোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই হোটেলগুলি ভেঙে ফেলার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের ২ মে জাতীয় পরিবেশ আদালত এই নির্দেশ জারি করেছিল। তবে জেলা প্রশাসন দুই বছর সেই নির্দেশ কার্যকর করেনি। এবার ২০ নভেম্বরের মধ্যে এই নির্দেশিকা কার্যকর করতে চেয়েছিল জেলা প্রশাসন। যা আপাতত আটকে গেল মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। হাসি ফুটল হোটেল ব্যবসায়ীদের মুখে।
মুখ্য সচিবের সঙ্গে আলোচনা না করেই জেলা প্রশাসন কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিল তাও জানতে চান। একই সঙ্গে অবিলম্বে হোটেল ভাঙার সিদ্ধান্ত বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।