সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
গোটা পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত দরিদ্র সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই একটি বিশেষ স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্য সরকারের এই ‘স্বাস্থ্য সাথী’ প্রকল্পের আওতায় বিনা পয়সায় চিকিৎসা সুবিধা পাবেন সাধারণ মানুষ। রাজ্যের যে কোনও সরকারি হাসপাতাল এবং বিশেষ কিছু বেসরকারি নার্সিংহোমে গিয়ে ‘স্বাস্থ্য সাথী’ কার্ড দেখিয়ে চিকিৎসা করাতে পারবেন সকলে।
তাও আবার বিনামূল্যে। এমনকি প্রয়োজন হলে অপারেশনের ব্যবস্থাও রয়েছে এই প্রকল্পের আওতায়। রাজ্যের তরফে এই ধরনের আর্থিক সুবিধা পাওয়ার ফলে উপকৃত হচ্ছেন বহু মানুষ। তবে সম্প্রতি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বেনিয়ম রুখতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যভবন।
স্বাস্থ্যভবন এর প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে সিনিয়র রেসিডেন্ট সহ যে সব সরকারি ডাক্তার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করেন তাঁদেরই হলফনামা দিয়ে সরকারকে জানাতে হবে। স্বাস্থ্যসাথী পোর্টালে যেসব সরকারি ডাক্তারের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের ‘ডক্টরস মাস্টার্স’ সফটওয়ার ফরম আপলোড করে স্বাক্ষর করতে হবে। অন্যথায় তদন্তে ধরা পড়লে কড়া পদক্ষেপ নেবে স্বাস্থ্যদপ্তর। আসলে সরকারি হাসপাতালের বন্ড পোস্টিংয়ে থাকা সিনিয়র রেসিডেন্টরা সরকারের কাছ থেকে ‘নন প্র্যাক্টিসিং’ অ্যালাওয়েন্স বা মহার্ঘ ভাতা পান। যারা এই ভাতা নেন, তাঁদের বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখা আইনত অপরাধ।
সেই কারণে তাঁদের হলফনামাও দিতে হয় যে সরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোনও হাসপাতাল অথবা নার্সিংহোম যুক্ত হবেন না। কিন্তু তারপরেও একাধিক ক্ষেত্রে নিয়ম ভাঙার অভিযোগ সামনে এসেছে। প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার পাশাপাশি বেসরকারী হাসপাতালে রোগী দেখার লোভও ছাড়ছেন না একাধিক ডাক্তার। কিছুদিন আগে অভয়া-আন্দোলন চলাকালীন বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের টাকা নেওয়ায় ৪১ সিনিয়র রেসিডেন্টকে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিল স্বাস্থ্যভবন। ইতিমধ্যে রাজ্যে সিনিয়র রেসিডেন্ট যাঁরা বন্ড পোস্টিংয়ে কর্মরত রয়েছে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার।
ইতিমধ্যে প্রায় ২ হাজার সিনিয়র রেসিডেন্টকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, কেন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে না, তা দ্রুত জানাতে হবে। তবে এই নিয়ম শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশের সব সরকারি হাসপাতালে প্রযোজ্য। বেনিয়মের বিষয়টি আর হালকাভাবে নিতে রাজি নয় স্বাস্থ্যদপ্তর। তাই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ফের হলফনামা দিতে বলা হয়েছে। এই জন্য ৬০ দিন বা দুমাস সময় ধার্য করা হয়েছে।