সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
২ ‘দিন আগের কথা। বর্ধমানের আউশগ্রামে ২০টি বিজেপির পরিবার বাংলার বাড়ির টাকা পেয়েছে। তাঁরা নিজেরাই তদ্বির করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই খবর মিলল, সিপিএম এবং আইএসএফ কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা।
সুতরাং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প যে দলমত নির্বিশেষে পাচ্ছে সেটা আবার প্রমাণ হয়ে গেল। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ওইসব কর্মীদের দেওয়া হল ফুল ও মিষ্টি।
কেন এমন করা হল? বারাসত-২ নম্বর ব্লকের দাদপুর গ্রামের পকদাহ এলাকায় এই সিপিএম-আইএসএফ কর্মীদের বসবাস। আজ সোমবার ওই গ্রামের ১০০ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকেছে। সিপিএম-আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরাই এখানে উপভোক্তা। এই ঘটনা নিয়ে পঞ্চায়েত সদস্যরা বলছেন, বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকরা বহুদিন ধরে অভিযোগ করছেন, রাজনৈতিক রং দেখে নাকি বাংলার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের ব্যাঙ্কে জমা পড়তেই সেই অভিযোগ আর টিকল না। তবে ওই কর্মী- সমর্থকরা অ্যাকাউন্টে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা পেয়ে খুশি।
কেমন অভিযোগ তোলা হয়েছিল? বিজেপি নানা অভিযোগ তুললেও তাঁদের কর্মীরাও বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা পেয়েছে আউশগ্রামে। যা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করছে না। অথচ আবাস যোজনার টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে। কেন্দ্রে বিজেপিরই সরকার। তাঁরা রাজ্য সরকারের থেকে প্রকল্পের টাকাও নিচ্ছেন আবার সমালোচনাও করছেন। এই টাকা ঢোকার আগে সিপিএম-আইএসএফ কর্মীরা দাবি করেছিলেন, ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া বাড়ি থাকা সত্ত্বেও বাংলার বাড়ি প্রকল্পে তাঁরা টাকা পাননি। বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ তোলেন। এবার তাঁরাই বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা পেলেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছেন, তাঁকে যাঁরা ভোট দিয়েছেন তিনি তাঁদেরও মুখ্যমন্ত্রী। আবার যাঁরা ভোট দেননি তিনি তাঁদেরও মুখ্যমন্ত্রী। এই নিয়ে কোনও বৈষম্য তিনি করেন না। রাজ্য সরকারের সব সামাজিক প্রকল্প সবাই পাচ্ছেন। আর এই ঘটনা নিয়ে দাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আবদুল হাই বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনকল্যাণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিভাজন করেন না। যে সব অভিযোগ তোলা হয়েছিল সেগুলি ভিত্তিহীন। তাই বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য কেউ কাটমানি চাইলে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পঞ্চায়েতে জানান। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।’