সুমনা মিশ্র। কলকাতা সারাদিন।
কম খরচে পৌঁছতে ভরসা সরকারি বাস। কারণ বেসরকারি বাসের থেকে সরকারি বাসের ভাড়া অনেকটাই কম। ফলে সাধারণ মানুষের ভরসা সরকারি বাস। কিন্তু পুজোর পর থেকেই রাস্তায় কমতে থাকে সরকারি বাস। রাত বাড়লেই শুধু সরকারি নয়, একই সঙ্গে বেসরকারি বাসের সংখ্যা কমতে। যার ফলে হয়রানির স্বীকার হয়ে হয় অফিস ফেরত যাত্রীদের।
সেই সঙ্গে বাসে বাদুর ঝোলা ভিড়। যা নজর এড়ায়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গত সপ্তাহে মন্ত্রীসভার বৈঠকে পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে ধমক দেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘সাইলেন্ট দফতর’ বলে ক্ষোভ প্রকাশও করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পরই নড়েচড়ে বসেন পরিবহন মন্ত্রী। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে সোমবার থেকেই রাস্তায় নেমেছে অতিরিক্ত সরকারি বাস। ৫৫০ বাস দিয়ে সরকারি বাসের ৩৩০০ ট্রিপ চলছিল কলকাতা শহর ও শহরতলিতে। বাসের সংখ্যা বাড়িয়ে তা ৪১৯৮টি ট্রিপ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জোর দেওয়া হয়েছে রাসবিহারী, সল্টলেক, নিউটাউন, শ্যামবাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়, যেখানে বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায়। ধাপে ধাপে বাসের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। পাশাপাশি বেসরকারি বাস মালিকদেরও রাস্তা বাস নামাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকেই তৎপর হয়েছে রাজ্যের পরিবহন দফতর। রাজ্যের পরিবহন প্রতিমন্ত্রী রাস্তায় নামেন। বিভিন্ন ডিপোগুলিতে যান। শুধু তাই নয়, সন্ধ্যে বেলায় পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী নিজে রাস্তায় নামলেন। সরকারি বাসের সংখ্যা ঠিক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখেন তিনি। গত সপ্তাহের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ধমক দিয়ে বলেন, রাস্তায় নেমে পরিদর্শনে যান কিনা মন্ত্রী? কিন্তু তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি তিনি। এবার সেই ধমকের পরই রাস্তায় নামলেন স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
সূত্রের খবর, সোমবার পরিবহন দফতরের একাধিক আধিকারিক আমতলা ডিপো, ঠাকুরপুকুর ৩এ ডিপো, শিলপাড়া ডিপোতে ঘুরে দেখেন। যাত্রীদের সঙ্গে কথাও বলেন।
এদিকে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও পরিবহণ সচিব সেক্টর ফাইভে গিয়ে বাসের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসেন। কার্যত মুখ্য়মন্ত্রী ধমক খাওয়ার পরেই রাস্তায় নামেন। মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমে বলেন, মুখ্য়মন্ত্রী যেখানে আমাদের ঘাটতি থাকে তখনই আমাদের বলেন। এয়ারপোর্ট থেকে ফেরার পথে তিনি দেখেন কয়েকজন রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। এরপরই তিনি বাসের ট্রিপ বাড়ানোর কথা বলেন। আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছি। যে সব জায়গা থেকে প্রচুর মানুষ যান…যে পরিমাণ সরকারি বাস থাকা দরকার সেটা কোথাও কোথাও অভাব দেখা যায়।
কী বলেছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী?
‘ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্ট সাইলেন্ট ডিপার্টমেন্ট হয়ে গিয়েছে। মন্ত্রী, সচিব কোনও দিন ভিজিট করেছেন। এদিকে মন্ত্রী সেই সময় বলেছিলেন কিছু বাস বাড়িয়েছি। এরপর মুখ্য়মন্ত্রী বলেছিলেন কিছু বলে কিছু হয় না। তুমি কি বাড়িয়েছ?’
এদিকে মুখ্য়মন্ত্রীর ধমকের পরেই রাস্তায় নামেন পরিবহণমন্ত্রী। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। সেক্টর ফাইভ থেকে রোজ বাস ধরেন যাঁরা তাঁদের একাংশ বলেন, হাওড়ার দিকে যাওয়ার পর্যাপ্ত বাস পাই না। এটা দেখা দরকার।