শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“সব হেলে পড়া বাড়ি মানেই বিপজ্জনক নয়।” সাফ জানিয়ে দিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।আর তাতেই শুরু হয়ে গেল নয়া বিতর্ক।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কলকাতায় অনেকগুলি বাড়ি আছে। বছরের পর বছর রয়েছে। আংশিক একটু হেলে গিয়েছে। বছরের পর বছর রয়েছে। এদিকের বাড়িটা অনুমোদিত বাড়ির প্ল্যান পায়নি। আজকে স্ট্রাকচারাল এবিলিটি টেস্ট হবে। তারপরে ওনারা কাগজপত্র নিয়ে আমার কাছে আসবেন। এফআইআর তো নিশ্চয়ই হয়েছে। আমি হট করে হঠকারী নই। এটা মেয়র ঠিক করবে না, এটা ইঞ্জিনিয়াররা ঠিক করবেন। সব হেলে পড়া বাড়ি বিপজ্জনক নয়, যদি স্ট্রাকচারাল এবিলিটি দিয়ে দেয়। যে স্ট্রাকচারাল ঠিক আছে, তাহলে বিপজ্জনক নয়।”
প্রসঙ্গত গত দেড় সপ্তাহে ইতিমধ্যেই হেলে পড়া বাড়ির সংখ্যা ৪ টে ছাড়িয়েছে। বাঘা যতীন, বেলঘরিয়া, ট্যাংরা, বিধাননগর পুরসভার দুটি এলাকার পর এবার তপসিয়ায় হেলে পড়েছে বহুতল। আতঙ্কে কাঁটা বাসিন্দারা। আর ঠিক এহেন পরিস্থিতির মাঝেই মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বললেন, “সব হেলে পড়া বাড়ি মানেই বিপজ্জনক নয়!”
খাস কলকাতায় ফের সামনে এসেছে বাড়ি হেলে পড়ার ছবি। তপসিয়ায়, কলকাতা পুরসভার ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বহুতলের ওপর বিপজ্জনকভাবে হেলে পড়েছে আরেকটি বহুতল। এতটাই বিপজ্জনকভাবে তা হেলে পড়েছে, যে লোহার বিম ঝালাই করে তা ঠেকনা দিয়ে রাখতে হয়েছে! যে আবাসনটি হেলে পড়েছে, তার বাসিন্দারা আতঙ্কিত। যে বহুতলের ওপর এই বাড়িটি তা হেলে পড়েছে, তার বাসিন্দারাও আতঙ্কে রয়েছেন। কলকাতা পুরসভা সূত্রে দাবি, এব্যাপারে কিছুই জানা নেই তাদের। পাশের ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডে ট্যাংরাতেও একে অপরের গায়ে হেলে পড়েছে দুটি বহুতল।
সম্প্রতি এমনই ঘটনার মুখোমুখী হয় বাঘাযতীন এলাকা। বাঘাযতীনে বহুতল হেলে পড়ার দায় কার? তা নিয়ে চরমে চাপানউতোর। অভিযোগ, তিনতলার অনুমতি থাকলেও, নির্মাণ হয়েছিল চারতলা। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বলছেন, তিনি জানেনই না, এই বহুতল কবে হয়েছে। ফিরহাদ হাকিম দায় ঠেলছেন বাম আমলের দিকে।
পাল্টা সিপিএমের দাবি, এই বহুতল তৈরি যখন শুরু হয়,তখনও এলাকায় ছিলেন তৃণমূলের কাউন্সিলর। আক্ষরিক অর্থেই পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে! বাঘাযতীনের বহুতল বিপর্যয়ে রাতারাতি আশ্রয়হীন বহু পরিবার। কিন্তু, এর দায় কার? এই বহুতল হেলে পড়ার পর সামনে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য!
অভিযোগ, ৩ তলা অবধি তৈরির অনুমতি থাকলেও, চারতলা অবধি নির্মাণ করা হয়েছিল। যা নিয়ে স্থানীয়রা আঙুল তুলেছিলেন এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলরের দিকে। বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দা বলেছিলেন, “বেআইনি কাজ দেখুন। তিনতলার ফাউন্ডেশন। চারতলা করেছে। কোনও পাইলিং নেই। পুরো ডোবা জমি। তার মধ্যে এই ফ্ল্যাট বানিয়েছে জোরজুলুম। পুরো ডোবা, পুরো ডোবা। কোনও পাইলিং বলে কিছু নেই। চারতলা যখন হয়, কাউন্সিলর তো ছিলেন। মিতালি ব্যানার্জিই ছিলেন তখন। সবাই তো জানে।” যদিও, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর আবার দাবি করছিলেন, তিনি জানেনই না এই বহুতল কবে তৈরি হয়েছে।