শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“মোদীনমিক্সকে স্যালুট। আয়করে ছাড় থেকে শুরু করে প্রবীণ নাগরিকদের কথা ভেবেছে সরকার।” এভাবেই আজ অষ্টমবারের জন্য কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট পেশ করার সময় দেশের সাধারণ মধ্যবিত্ত এবং প্রবীণ নাগরিকদের জন্য যে সমস্ত ছাড়ের ঐতিহাসিক ঘোষণা করেছেন তার প্রেক্ষিতে ধন্যবাদ জানালেন বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করতে গিয়ে বড় ঘোষণা করেছেন। এবার ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয় করমুক্ত থাকবে, যা মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ স্বস্তির বার্তা। নতুন আয়কর কাঠামো অনুসারে, এই করছাড়ের ফলে দেশের সাধারণ চাকরিজীবী ও ছোট ব্যবসায়ীরা সরাসরি উপকৃত হবেন। এই বিষয়টি নিয়েই মূলত উচ্ছ্বসিত শুভেন্দু।
সাধারণ মধ্যবিত্ত এবং প্রবীণ নাগরিকদের পাশাপাশি মহিলা এবং যুব সমাজের জন্যও নতুন দিশা রয়েছে এবারের বাজেটে। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে শুভেন্দু লিখেছেন, “পাশাপাশি নারীদের সুরক্ষা থেকে যুবসমাজের দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে। এই বাজেট স্কুল শিক্ষার দিকেও এমনভাবে নজর দিয়েছে যাতে শিক্ষাক্ষেত্রে অল্প সময়ের মধ্যেই আরও উন্নতি হয়।”
তবে, বাংলার বঞ্চনা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী কোনও মন্তব্য করেননি। রাজ্যের জন্য কোনও বিশেষ বরাদ্দ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। এবারের বাজেটে বার্ষিক ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে, যা মধ্যবিত্তদের জন্য স্বস্তির খবর বলে মনে করছে কেন্দ্র। শুভেন্দু অধিকারীও মনে করেন, এর ফলে সাধারণ চাকরিজীবী ও ছোট ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন। তবে, বিরোধীরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “মাসে ১ লাখ টাকা আয় কতজন মানুষের রয়েছে? এতে মধ্যবিত্তের কোনও উপকার হবে না। আসলে এটি মধ্যবিত্তের সঙ্গে প্রতারণা।”
তৃণমূলের বিরোধিতার প্রেক্ষিতে রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার তৃণমূলকে পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, “বিজেপি করে বলে আপনারা একটা ঘর দিচ্ছেন না আর আশা করছেন কেন্দ্র প্রকল্প দেবে আপনাদের?”
কেন্দ্রীয় বাজেট জনমুখী ও এর জেরে সাধারণ মধ্যবিত্ত ব্যপক উপকৃত হবে দাবি করে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “বাংলাকে প্রকল্প দিয়ে কী হবে? বাংলার সরকার তো লড়াই করতে ব্যস্ত। বাজেটে রাজ্যের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে যে প্রকল্পটা ঘোষণা করা হল, সেই ধনধান্য কৃষি যোজনাই দেখবেন পশ্চিমবঙ্গে কার্যকরী হচ্ছে না। যারা মারামারি করে সব সময় তাদের আপনি প্রকল্প দিয়ে কী করবেন? উড়িষ্যায় এর আগে আমাদের বিরোধী দলের সরকার ছিল, কিন্তু উড়িষ্যা প্রকল্প পেয়েছে।”
সুকান্ত মজুমদারের প্রশ্ন, “আমি বারবার পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলকে বোঝানোর চেষ্টা করছি, আপনারা লড়াই করুন, মারামারি করুন, কিন্তু নির্বাচন পর্যন্ত। কিন্তু ভোট মিটে গেলে শুধু উন্নয়ন, উন্নয়ন আর উন্নয়ন। সেক্ষেত্রে আমরা – ওরা করা উচিত নয়। বিজেপি করে বলে আপনারা একটা ঘর দিচ্ছেন না আর আশা করছেন কেন্দ্র প্রকল্প দেবে আপনাদের?”