সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
কলকাতার অলিতে গলিতে রয়েছে ছাদের ওপর রেস্তোরাঁর সেট আপ যার পোশাকি নাম রুফটপ রেস্তোরাঁ। কিন্তু যাঁরা প্রকৃতিকে উপভোগ করতে করতে খেতে ভালবাসেন, তাঁদের জন্য বিরাট দুঃসংবাদ। আপাতত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কলকাতার সমস্ত রুফটপ রেস্তোরাঁ।
‘কলকাতায় আপাতত থাকবে না কোনও রুফটপ রেস্তোরাঁ’, বড়বাজারকাণ্ডের জেরে নির্দেশিকা কলকাতা পুরসভার। ‘সিঁড়ির মতো ছাদও কারও একার নয়, বিক্রি করা যাবে না’, পুলিশ, দমকলের সঙ্গে বৈঠকের পরে কড়া নির্দেশিকা পুরসভার। সিঁড়ির মতো ছাদ কারও নয়, বিক্রি করা যাবে না পুলিশ, দমকলের সঙ্গে বৈঠক সারলেন মেয়র। কলকাতা পুরসভাকে সাহায্য করবে পুলিশ। এই সিদ্ধান্তের জেরে রেস্তোরাঁগুলি ব্যবসায় বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছে।
নতুন গজিয়ে ওঠা অলিতে গলিতে রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে কলকাতার একাধিক ঐতিহ্যসালী রেস্তোরাঁতেই ছাদে বসে খাওয়ার সুবিধা রয়েছে। সুন্দর করে ছাদটাকে সাজিয়ে তোলা হয় ওয়ার্ম আলোয়। সেই আলোতেই চলে খাওয়া দাওয়া। কোথাও কোথাও থাকে মদ্যপানের ব্যবস্থাও। এমনকি কোথাও কোথাও ছাদ সাজাতে ব্যবহার করা হয় জাকুজি, বসে লাইভ কনসার্ট ও। কলকাতাবাসীর কাছে বেশ প্রিয় এই রুফটপ রেস্তোরাঁ। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, সব জায়গাতেই কম বেশি রুফটপ রেস্তোরাঁ রয়েছে বসে, তবে দক্ষিণ কলকাতা ও সল্টলেকের দিকে রুফটপ রেস্তোরাঁর সংখ্যা অনেক বেশি। পুরসভার এই সিদ্ধান্তে ব্যবসায় বড় ক্ষতির আশঙ্কা দেখতেন রেস্তোরাঁর মালিকেরা।
ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র। বরো ভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি করে প্রতিটি রেস্তোরাঁতে নির্দেশ যাচ্ছে। পুরসভার তরফ থেকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, রেস্তোরাঁর জন্য বিক্রি করা যাবে না ছাদ।
মেয়র বলেছেন, “নীচের জায়গা যেমন কেউ বিক্রি করতে পারেন না, তেমনি ছাদও বিক্রি করা যায় না। রুফটপ খোলা থাকবে, যা রেস্টুরেন্ট হয়েছে, বন্ধ করতে হবে। কারণ নীচে আগুন লাগলে, মানুষ যাতে ছাদে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারেন।”
মেছুয়ার বড়বাজারে হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের জেরে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। প্রথম থেকেই এই হোটেলের বিরুদ্ধে একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। আগুন লাগার পর হোটেল থেকে বেরোতেই পারেননি হোটেলে আগত অতিথিরা। ৯০ শতাংশ মৃত্যুর কারণ দমবন্ধ হয়েই। দিঘা থেকে ফিরে সরাসরি ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে বড়বাজার, জোড়াসাঁকোর এলাকার একাধিক হোটেল, মার্কেট, ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা নিজেই বলেছিলেন, নিয়ম থাকলেও, অনেক ব্যবসায়ী তা মানেন না। এরপর ম্যাগমা মার্কেটে পৌঁছে যান মমতা। সারপ্রাইজ ভিজিটে গিয়ে দেখতে পান, সেখানে গাদাগাদি করে ২৪ টা গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ছিল।এরপরই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন দমকল, পুরসভা, পুলিশ কমিশনারকে একসঙ্গে বৈঠকে বসতে। তারপরই মেয়র এই নির্দেশ দেন।

মুখ্যমন্ত্রী মেয়রকে আরও কড়া হওয়ার নির্দেশ দেন। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, শহরের ছাদে থাকা সব কটি রেস্তোরাঁ বন্ধ করতে হবে। আগে বরো ভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। কোন এলাকায় কতগুলো রুফটপ রেস্তোরাঁ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখে দ্রুত বন্ধ করতে হবে। আগুন লাগলে, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে ছাদে মানুষ আশ্রয় নিচ্ছেন। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে এমার্জেন্সি গেট বন্ধ থাকছে।