সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত কন্যাশ্রী এবং রূপশ্রী প্রকল্প আমূল বদলে দিয়েছে বাংলার মহিলাদের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি। শুধুমাত্র এই দুই প্রকল্পের জেরে বাংলার নারী সমাজ আর্থ সামাজিক দিক থেকে এগিয়ে গিয়েছে কয়েক দশক। ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশের অর্থনীতিতে সমাজ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো এবং নারী শক্তির বিকাশে কন্যাশ্রী এবং রুপশ্রী প্রকল্প মডেল হওয়ার যোগ্য। এভাবেই মমতার মস্তিষ্কপ্রসূত কন্যাশ্রী এবং রূপশ্রীর সাফল্যকে দরাজ সার্টিফিকেট দিল ইউনিসেফ।
বণিকসভা সিআইআই, ‘ইমপ্যাক্ট ইস্ট, ২০২৪ কনক্লেভ’নামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফ-এর চিফ ফিল্ড অফিসার মঞ্জুর হোসেন। তিনি সামাজিক উন্নয়নে কন্যাশ্রী এবং রূপশ্রী প্রকল্পের উজ্জ্বল ভূমিকার কথা বলেন। সেইসঙ্গে, শিশুবান্ধব সমাজ তৈরির জন্য সরকারি প্রচেষ্টার প্রশংসা করে তিনি জানান, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করছে এখানকার সরকার। সমাজসেবামূলক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সিএসআর ফান্ড। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমহলের স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বরা।
টাটা স্টিলের তরফে ছিলেন সৌরভ রায়, বি জি সমাদ্দার অ্যান্ড সন্স-এর থেকে দেবাশিস দত্ত এবং জিন্দাল স্টিলের প্রশান্ত কুমার হোতা সহ প্রমুখরা আসেন এই অনুষ্ঠানে। এদিনের অনুষ্ঠানে পঞ্চাশটিরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অংশ নেয়। কিছুদিন আগে কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠানেও ইউনিসেফের প্রশংসা কুড়িয়েছিল রাজ্যের একাধিক সামাজিক প্রকল্প।
এমনকি, কন্যাশ্রীর মতো মেয়েদের স্বনির্ভর করার প্রকল্প শুধু ভারত নয়, সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলেও জানায় ইউনিসেফ। ইউনিসেফের প্রতিনিধি আরিয়ান দে ওয়াগত বলেন, “কন্যাশ্রী প্রকল্প নারীদের সশক্তিকরণে বড় ভূমিকা নিয়েছে। শিশুদের পুষ্টি, বৃদ্ধি নিয়ে ইউনিসেফ যে সমস্ত কাজ করছে, সেগুলি কন্যাশ্রীর কারণে আগের থেকে অনেক বেশি সফল হচ্ছে। এই প্রকল্প কিশোরীদের উচ্চশিক্ষায় উৎসাহিত করছে। বাল্যবিবাহ রোধে একটি বড় ভূমিকা নিচ্ছে।”
এই প্রসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন,’বাংলার সরকার নারীর অগ্রগতির ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বকে পথ দেখিয়েছে। আগামী দিনেও নারী সুরক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলার সরকার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে।’ পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বাংলার মহিলাদের এই উন্নতিকে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘কন্যাশ্রী এবং রুপশ্রী প্রকল্পগুলি এখন ইউনিসেফ এর মঞ্চে প্রশংসিত হচ্ছে। এর চেয়ে বড় আর কি হতে পারে? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারা বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছেন। তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে সর্বত্র মহিলাদের সাফল্যের মঞ্চ দেওয়া যায়।’
প্রসঙ্গত, গত ২০১৩ সালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্প চালু করেন। যা ইউনেসকোতে সেরার শিরোপা অর্জন করে। কন্যাশ্রী এখন গোটা দেশের কাছে একটি দৃষ্টান্ত। তা যেন আরও একবার প্রমাণিত।