সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে জামিন পেলেন কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। শুক্রবার ইডি মামলায় ‘কাকু’র জামিন মঞ্জুর করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। অন্যদিকে, নিয়োগ মামলায় ‘কাকু’কে শোন অ্যারেস্টের (গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিকে আবার গ্রেফতার করার প্রক্রিয়া) আবেদন করেছিল সিবিআই। তবে একাধিক বার আদালতের হাজিরা এড়িয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। ফলে এখনও পর্যন্ত নিম্ন আদালতে ‘কাকু’কে শোন অ্যারেস্টের অনুমতি পায়নি সিবিআই। তাই ইডি মামলায় জামিন পাওয়ায় সুজয়কৃষ্ণের জেলমুক্তি হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে জামিন মিললেও একাধিক শর্ত বেধে দিয়েছেন বিচারপতি। আদালত জানিয়েছে, মামলার সঙ্গে যুক্ত কোনও তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করা যাবে না। জমা রাখতে হবে পাসপোর্ট। আদালতের অনুমতি ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে বাইরে যেতে পারবেন না সুজয়কৃষ্ণ। সাক্ষীদের প্রভাবিত করা যাবে না। এছাড়া নিম্ন আদালতের এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না ‘কাকু’। নিম্ন আদালতের অনুমতি ছাড়া বদলাতে পারবেন না ফোন নম্বরও।
নিয়োগ মামলায় এক কথোপকথনের সূত্র ধরে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে গ্রেফতার করে ইডি। এরপর তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়েও বিস্তর টানাপড়েন হয়। এরপর থেকেই প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি সুজয়কৃষ্ণ। সম্প্রতি সুজয়কৃষ্ণকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে বিশেষ আদালতে আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় সংস্থা।
আদালতে সিবিআই জানায়, সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা প্রয়োজন। কিন্তু ‘কাকু’কে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু পর পর চার বার তিনি হাজিরা এড়িয়ে যান। জেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, ‘কাকু’ অসুস্থ। জেলের হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। ফলে তাঁকে হাজিরা করানো সম্ভব নয়।
জেলের পক্ষ থেকে আদালতে ‘কাকু’র মেডিক্যাল রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়েছে একাধিক বার। প্রসঙ্গত, সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারের আশঙ্কায় আগাম জামিনের আবেদন করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। অন্যদিকে, ‘কাকু’কে হেফাজতে নিতে চেয়ে ফের নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি। যদিও এই মামলায় ফের বৃহস্পতিবারও আদালতে হাজিরা দেননি ‘কাকু’।
ইডির ওই মামলায় এদিন জামিন পেয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। তবে ইডির পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই যেভাবে গ্রেফতার করেছে, একইভাবে সুজয়কৃষ্ণকেও যদি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গ্রেফতার করে তাহলে এখনই তাঁর জেলমুক্তি ঘটবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।