সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
র্যাগিংয়ের তকমা জড়িয়ে আছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। সেটা যে বাংলা বিভাগ এবং তার মেন হস্টেল থেকে পড়ে প্রথম বর্ষের নবাগত ছাত্রের মৃত্যু সেটা সবাই জানেন এবং তা নিয়ে রাজ্যজুড়ে হইচই হয়েছিল। এখন একটি তথ্য উঠে আসছে যে, র্যাগিংয়ে জড়িতরা ‘ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ’ দিয়ে চাকরি পেয়ে যাচ্ছেন।
এই খবর চাউর হতেই বিষয়টি নিয়ে কড়াকড়ি শুরু করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এবার এটা নিয়ন্ত্রণ করতে জরুরি পদক্ষেপ করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর তাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠকে র্যাগিংয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কার্যকর করতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কী কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে? যাদবপুরের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠকে বিষয়টি প্রথমে তুলে ধরা হয়। তখনই বাকি সদস্যদের মধ্যে আলোচনা হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, র্যাগিংয়ে জড়িতদের পঠনপাঠন চললেও পরীক্ষার ফলাফলের মার্কশিট তাঁদের দেওয়া হবে না। তাতে নতুন চাকরিতে যোগদান সহজ হবে না। গত সপ্তাহে বৈঠকে বসে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি। সেখানেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ে জড়িতদের মার্কশিট আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ে জড়িতরা এখন জেলে। কিন্তু আরও কয়েকজন পড়ুয়া র্যাগিংয়ে জড়িত বলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করলেও তাঁদের শাস্তি হয়নি।
কয়েকজন শোকজের চিঠি পেয়েছেন। আবার কয়েকজন ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার বা কিছু সিমেস্টার থেকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ১৫জন পড়ুয়া কলকাতা হাইকোর্টে গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের শাস্তির পদক্ষেপে স্থগিতাদেশ মিলেছে। তাই এখন তাঁরা ক্লাস করছেন বা পরীক্ষা দিচ্ছেন। আবার র্যাগিংয়ে অভিযুক্ত, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্র ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন বলে সূত্রের খবর। যাদবপুরের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠকে সেটা নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছাড়া কাউকে পরীক্ষার মার্কশিট দেওয়া হবে না।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ কার্যকর হলে বেপরোয়া এবং বেয়াদপ ছাত্ররা বেশ চাপ পড়বেন। একইসঙ্গে র্যাগিংয়ের দুঃসাহস জোর ধাক্কা খাবে। মেন হস্টেলে ২০২৩ সালের অগস্ট মাসের ঘটনার পরেও অবশ্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে বা অন্যত্র বড় কোনও র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেনি।
যা ঘটেছে তা ছোটখাট। তা নিয়ে অভিযোগ জমা পড়তেই অচিরে মিটেছে। তবে আজ, সোমবার আলিপুর কোর্টে পকসো বিশেষ আদালতে ২০২৩ সালের অগস্ট মাসের র্যাগিংয়ে মৃত্যুর মামলার শুনানি হবে।