সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
বাংলায় প্রায় 13 বছর একটানা ক্ষমতায় থাকার সত্বেও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে শক্তিশালী কোন সংগঠনের অভাবে আর জি কর আন্দোলনের সময় বারে বারে ধাক্কা খেতে হয়েছে তৃণমূলকে এবং রাজ্য সরকারকে। এবার তাই সেই ভুল শুধরে নেওয়ার জন্য নতুন পদক্ষেপ করল শাসক দল তৃণমূল। সোমবার আত্মপ্রকাশ করল তৃণমূলের আরও একটি সংগঠন। রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার নেতৃত্বে গঠন হল এই সংগঠন। নাম প্রোগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশন(পিএইচএ)। নতুন সংগঠন কেন করতে হল তৃণমূলকে, এদিন প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে সেই ইঙ্গিত দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা পেশায় চিকিৎসক শশী পাঁজা। আরজি কর আন্দোলনে বিরোধীদের ঠিকভাবে মোকাবিলা করা যায়নি বলে মন্তব্য করলেন।
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তৃণমূলের নতুন সংগঠন গড়ার খবর সামনে আসার পরই আলোচনা শুরু হয়েছিল, কেন হঠাৎ নতুন সংগঠন? কারণ, প্রোগ্রেসিভ ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন নামে তৃণমূলের একটি চিকিৎসক সংগঠন রয়েছে। আরজি কর কাণ্ডের জেরেই নতুন সংগঠন গড়া হচ্ছে কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কারণ, আরজি কর কাণ্ডের সময় শাসকদল অস্বস্তিতে পড়লেও তৃণমূলের চিকিৎসক সংগঠন তার মোকাবিলায় কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে মনে করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন শশী পাঁজার মন্তব্যে সেটাই স্পষ্ট হল। নতুন সংগঠনের নেতৃত্বে দেবেন তিনিই।
সাংবাদিক বৈঠকে শশী পাঁজা বলেন, সরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতি, ধর্মঘট, বিভ্রান্তিমূলক প্রচারের মোকাবিলা করবে পিএইচএ। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ এলেও পরিদর্শনে যাবে। তৃণমূলের আগের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের সংগঠন পিএইচএ-র সঙ্গে মিশে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে জানান, স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে সরাসরি যোগাযোগ রাখবে তৃণমূলের নতুন সংগঠন। আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা যদি তৃণমূলের নতুন সংগঠনে যোগ দিতে চান তাহলে কি নেওয়া হবে? শশী পাঁজা বললেন, “উন্নয়নে বিশ্বাস করলে অবশ্যই নেওয়া হবে।” পিএইচএ-র প্রথম একজিকিউটিভ বডির মিটিং হবে ৮ ফেব্রুয়ারি।
আরজি করে ঘটনার নিন্দা করে শশী পাঁজা বলেন, “আরজি করের ঘটনা নিন্দনীয়। তবে আরজি করের ঘটনায় অনেক বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছিল, যা শক্তিশালী সংগঠন না থাকায় সেটা মোকাবিলা করা যায়নি। রাজ্য সরকার কাজ করেছে। সেগুলোকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। সেই ধরনের পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতে চাই।” তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন করছেন, তার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন সংগঠন গড়া হচ্ছে। বিরোধীদের বুঝিয়ে দিতে হবে, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কী কী হয়েছে।
ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেবাশ্রয়ের উদ্যোগ নিয়ে এদিন শশী পাঁজা বলেন, “আমরা বিধায়করাও এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে থাকি। সেবাশ্রয়ও তেমনই একটা কর্মসূচি। বিতর্ক কিছু নেই।”
জুনিয়র ডাক্তার আসফাকুল্লা নাইয়া ও কিঞ্জল নন্দকে হেনস্থা করতে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল পদক্ষেপ করছে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে শশী পাঁজা বলেন, “চিঠি এলে চিঠির উত্তর দিয়ে দাও। ফিনিশ।” তাঁর কথায়, “ডাক্তারদের অপছন্দ করছি তা নয়। আমরা কষ্ট পেয়েছি পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায়।”