সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
ফের পুরনো চেহারায় ফিরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুঝিয়ে দিলেন আজও কেন বাংলার রাজনীতিতে শ্রেষ্ঠ আসনে বসানো হয় মমতাকে।
সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনে আচমকা পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে ধর্নায় বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতেই তিনি সেখানে পৌঁছেছেন। রয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। বেশ কয়েক মিনিট মাইক হাতেই দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী।
এরপর মমতা বলেন, ”আমার নিরাপত্তাজনিত বারণ থাকা সত্ত্বেও নিজে ছুটে এসেছি। আপনাদের আন্দোলনকে কুর্নিশ জানাচ্ছি। ছাত্র আন্দোলন থেকে আমি উঠে এসেছি। কাল ঝড়জল হয়েছে। আপনারা যে ভাবে বসে আছেন, আমার কষ্ট হচ্ছে। ৩৪ দিন ধরে বসে আছেন। আমিও রাতের পর রাত ঘুমোইনি। আপনারা রাস্তায় থাকলে আমাকেও পাহারাদার হিসাবে জেগে থাকতে হয়।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ”যদি আপনারা কাজে ফিরতে চান, আমি কথা দিচ্ছি, আপনাদের দাবিগুলি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করব। আমি একা সরকার চালাই না। সকলের সঙ্গে আলোচনা করব। যদি কেউ দোষী হন, শাস্তি পাবেন। সিবিআইকে অনুরোধ করব, দোষীদের ফাঁসি হোক। কেউ দোষী থাকলে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেব। এটুকু বলতে এসেছি।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ”আপনারা আমাদের ঘরের ভাইবোন। আমি কোনও অবিচার হতে দেব না। সব হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি নতুন করে তৈরি করা হবে। তাতে জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার, নার্স, পুলিশ থাকবে। এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতি আমি ভেঙে দিলাম। নতুন করে তৈরি করা হবে। বাকি আপনাদের যা দাবি আছে, যদি সত্যি কেউ দোষী হয়, তারা শাস্তি পাবে। কেউ আমার বন্ধু বা শত্রু নয়। যাঁদের আমার বন্ধু বলছেন, আমি তাঁদের চিনিই না। প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাঁরা এসেছেন। সাধ্যমতো পদক্ষেপের চেষ্টা করব। আপনারা কাজে ফিরুন। আমি কোনও আপনাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করব না।”
মমতা বলেন, ”সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা চলছে। কোনও পদক্ষেপ আপনাদের বিরুদ্ধে করা হবে না। এখন আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এখানে আসিনি। আন্দোলনের সমব্যথী হিসাবে এসেছি। বড় দিদি এসেছি। আমাকে সময় দিন। ভাল থাকুন।”
ধর্নামঞ্চে আন্দোলনকারীদের যা খাবার দেওয়া হচ্ছে, নির্বিচারে তা না খাওয়ার অনুরোধ করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ”আপনাদের কাছে আসা মানে নিজেকে ছোট করা নয়। বড় করা। এটা আমার শেষ চেষ্টা।”