সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
নবান্ন থেকে জেলায় জেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, যেখানে আবাস সমীক্ষায় কোনও ধরনের রাজনৈতিক নেতা বা জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সদস্য কিংবা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য-কেউই এই সমীক্ষার কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না।
এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, পূর্বের আবাস সমীক্ষার সময় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপের কারণে অনেক অযোগ্য ব্যক্তির নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, যা রাজ্যের জন্য সমস্যা তৈরি করেছিল। কেন্দ্র সরকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এই প্রকল্পের জন্য টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। তবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার প্রান্তিক মানুষের জন্য ডিসেম্বরের মধ্যে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
নবান্নের সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পূর্ববর্তী সমীক্ষার পর কেন্দ্র সরকার ১১ লক্ষ গরিব মানুষের জন্য বাড়ি তৈরির টাকা অনুমোদন দিলেও পরে তা ফিরিয়ে নেয়। এর ফলে, রাজ্য সরকার নতুন করে ৩৫ লক্ষ বাড়ির আবেদনকারীর একটি তালিকা তৈরি করে, যাদের মধ্যে অনেকের নাম আদালতে মামলা এবং অন্যান্য কারণে যুক্ত হয়েছে।
বর্তমান সমীক্ষার কাজে রাজ্য সরকার সঠিক তথ্য যাচাইয়ের ওপর জোর দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই ২ লক্ষ বাড়ির যাচাই সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ ‘অযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অর্থাৎ, যাচাই হওয়া ২ লক্ষের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজারের নাম বাদ পড়ছে-যারা ইতিমধ্যে বাড়ি বানিয়েছেন বা তাদের আয় বেড়েছে।
নবান্নের নির্দেশ অনুযায়ী, সমীক্ষার সময় যদি কোনো নেতা বা জনপ্রতিনিধি হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই নির্দেশনার ফলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আবাস প্রকল্পের কার্যকারিতা ও স্বচ্ছতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে, যাতে প্রকৃত গরিব মানুষের জন্য বাড়ি তৈরির সুযোগ নিশ্চিত করা যায়।