সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
ফের চরমে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল বিরোধ। আচার্যের চেয়ার ফাঁকা রেখেই হল সম্পন্ন হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এলেন না আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আচার্য আসবেন কি না, এই সংশয়ে থমকে ছিল পুরো প্রক্রিয়াই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফাঁকাই রইল চেয়ার।
সকাল থেকেই প্রশ্ন ছিল, আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস উপস্থিত থাকবেন কি না। সমাবর্তন নিয়ে আগেই আপত্তি জানিয়েছিল রাজভবন। আচার্যের জন্য অপেক্ষাও করা হয় বেশ কিছুক্ষণ। পতাকা উত্তোলন করতে গিয়েও থমকে যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রাজভবনের সঙ্গে যাদবপুরের সংঘাত অতীতে বহুবার হয়েছে। গত বছরে যে সমাবর্তন অনুষ্ঠান পালিত হয়েছিল সেখানেও রাজ্যপালের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ রাজ্যপালের হাতেই থাকে। তিনিই আচার্য। যাদবপুরের ক্ষেত্রেও সেই একই নিয়ম। সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঠিক নিয়ম মেনে পালিত হচ্ছেনা। এই অভিযোগ আগেই করেছিল রাজ্যপাল। এবারও সেই একই দাবি তোলে রাজভবন। তবে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে আমন্ত্রণ পত্র দেওয়া হলেও এদিন তিনি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এলেন না। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে অনেকক্ষণ বৈঠক হয় আচার্য সিভি আনন্দ বোসের। কারণ কৈফিয়ত তলব করেছিলেন রাজ্যপাল। যদিও তাতে কোনও লাভ হয়নি। তাই আজ অবশেষে আচার্যকে ছাড়াই হল সমাবর্তন অনুষ্ঠান। আচার্য সিভি আনন্দ বোস চিঠিতে দাবি করেন, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হবে শীঘ্রই। তখন তাঁকে সমাবর্তন করার দায়িত্ব দেওয়া হবে। তার আগে এত তাড়াহুড়ো করে সমাবর্তনের কোনও প্রয়োজন নেই। রাজ্যপাল অর্থাৎ আচার্য বলেছিলেন, কিছুদিন পরই স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হবে। তারপর সমাবর্তন হোক। রাজভবনের অভিযোগ ছিল, যেভাবে তড়িঘড়ি সমাবর্তনের আয়োজন করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ বৈআইনি। রাজ্যপালের যুক্তি ছিল, এভাবে তাড়াহুড়ো করলে ডিগ্রি প্রাপকদের সমস্যা হতে পারে। কিন্তু তা মানতে চায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিয়ে অন্তবর্তী উপাচার্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বোস। পালটা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, আইন লঙ্খনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। রাজ্যপাল না এলেও তাঁর দূত জিতেন্দ্রনাথ রায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন নিয়ে রাজভবনের অভিযোগ, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্ট্যাটিউট’ না মেনে তাড়াহুড়ো করে সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়েছে। এই বিষয়টিকে ‘সম্পূর্ণ বেআইনি’ বলে আখ্যা দেন রাজ্যপাল। কিন্তু এসব মানতে রাজি নয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাই হয়ে গেল সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এখন দেখার জল কতদূর গড়ায়।