কনিষ্ক সামন্ত। কলকাতা সারাদিন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের একবার জালি হিন্দু বলে আক্রমণ করে তাঁকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর লাগাতার অত্যাচারের প্রতিবাদে বিজেপির আয়োজিত সভায় শুভেন্দুবাবু বলেন, ক্ষমতা থাকলে পুরী ধামের মতো দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে অহিন্দুদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেখান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিনের সভায় শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আপনি একটা জালি হিন্দু। আপনি জগন্নাথ মন্দির তৈরি করেছেন। আপনি কেন সরকারি টেন্ডারে লিখেছেন জগন্নাথ ধাম কালচারাল সেন্টার? কেন সরকারি কাগজে শ্রী জগন্নাথ ধাম টেম্পল লিখতে পারেননি? কারণ যত খুশি ভাস্কর্য করুন, আমাদের কোনও আপত্তি নেই। চার ধামের এক ধাম পুরী ধাম। পুরী ধাম দুটো হয় না। পুরী ধাম বদলানো যায় না। হিন্দুরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে বলে আপনি এখন হিন্দু সাজার চেষ্টা করছেন। না, হবে না। আপনাকে সবাই চিনে ফেলেছে। আমি আপনাকে চ্যালেঞ্জ করলাম। অক্ষয়তৃতীয়ায় আপনি উদ্বোধন করুন। আপনি সেদিন সাংবাদিকদের বলছিলেন, এখানে পুরী ধামের মতো প্রসাদ পাওয়া যাবে। প্রত্যেক দিন ধ্বজ পরিবর্তন হবে। আচ্ছা মাননীয়া, আপনি জানেন কি, পুরী ধামে সনাতনী ছাড়া অন্যদের প্রবেশ নিষেধ? আপনি এটা লিখতে পারবেন তো? দম আছে? অপেক্ষায় থাকলাম।”
পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম জনসংখ্যা নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে আয়োজিত সভা থেকে তিনি দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম জনসংখ্যা ৩৫ শতাংশ। এমনকী কয়েক বছরের মধ্যে মুসলিমরা পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাবে বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বাংলাদেশে একটা হিন্দু বিরোধী সরকার তৈরি হয়েছে। তারা শুধু ওখানে হিন্দু নিধন ও ৬০০ হিন্দু মন্দির ভেঙেছে তাই নয়, তারা হিন্দুদের অস্তিত্ব বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলতে চায়। আপনারা ৫১ সালের জনগণনার তথ্য তুলনা করলে বুঝতে পারবেন, কী ভাবে আমাদের দেশে ও আমাদের রাজ্যে জনবিন্যাস বদল করা হচ্ছে। দেশ ভাগের সময় পূর্ব পাকিস্তানে ৩৩ শতাংশ হিন্দু ছিল। ৭১ সালে বাংলাদেশ গঠনের সময় সেখানে ২২ শতাংশ হিন্দু ছিল। আজকে সেই সংখ্যা কমে রয়েছে ৭.৫ শতাংশ। আমেরিকা যে ভাবে লাদেনকে খতম করেছে। ইজ়রায়েল যে ভাবে ভিতরে ঢুকে হামাসের প্রধানকে খতম করে দিয়েছে। ঠিক একই ভাবে এই জঙ্গিগুলোকে, এই অর্বাচিন সরকারকে উৎখাত করার জন্য বিশ্বসমুদায় এগিয়ে আসবে এই আবেদন করব।”
এর পরই রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা নিয়ে ফিরহাদের মন্তব্যকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, “কয়েকদিন আগে জনাব ফিরহাদ হাকিম বললেন, ভারতে আমরা ১৭ শতাংশ, আর পশ্চিমবঙ্গে ৩৩ শতাংশ। জানলেন কী করে ৩৩ শতাংশ? ২০১১ সালে শেষ জনগণনা হয়েছে। সেই জনগণনা অনুসারে বাংলায় মুসলিম ২৭ শতাংশ। আর উনি বলছেন ৩৩ শতাংশ। হ্যাঁ, আমরাও চোখে দেখতে পাচ্ছি। ৩৩ কেন ৩৫ শতাংশ ওরা হয়ে গেছে। তিনি বলছেন, এত জনসংখ্যা বাড়াও যাতে এই রাজ্যেও আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হই। আর ভারতেও আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হই।”
এর পরই শুভেন্দু অধিকারী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “তাহলে কী হবে বন্ধু? তখন সম্প্রীতি, ধর্মনিরপেক্ষতা থাকবে? থাকবে না। তখন শরিয়া আইন চলবে। মুসলিম পার্সোন্যাল ল বোর্ড চলবে। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর তার ভাইপোকে লাথি মেরে সরিয়ে এই ফিরহাদ, সিদ্দিকুল্লাহ, জাভেদ, হুমায়ুঁরা বলবে, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী হবে। তোমরা যাও ভাগো।”