রাহুল সিংহ মজুমদার। কলকাতা সারাদিন।
এবার কলকাতার সোনারপুর অঞ্চল থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, এরা সকলেই অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি। অবৈধভাবে বাংলায় এসে থাকছিলেন।
গোপনসুত্রে খবর পেয়ে সোনারপুর থানার পুলিশ বৈকুন্ঠপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে। রবিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। কিভাবে ও কি কারণে তারা এখানে এসে ছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঠিক কী উদ্দেশ্যে তাঁরা ভারতে থেকে গিয়েছিলেন তা জানার চেষ্টায় পুলিশ।
সোনারপুর এলাকার এক বস্ত্র কারখানায় কাজ করতেন ওই ৫ জন। অভিযোগ, অবৈধভাবে বাংলায় ঢুকে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন তাঁরা। তারপর স্থানীয় কারখানায় কাজ শুরু করেন। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁদের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। সেই প্রেক্ষিতেই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পরে ওই ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁরা সকলেই পুরুষ। কারও কাছে দেশে থাকার পোক্ত নথি নেই বলে দাবি করা হয়েছে।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সোনারপুরের বৈকুন্ঠপুর এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে থাকছিলেন পাঁচ বাংলাদেশি। তবে যে বাড়িতে তাঁরা থাকতেন সেই বাড়ির মালিক পলাতক। তার সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি জানিয়েছেন, টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ওই পাঁচ বাংলাদেশি ভারতে ঢুকেছিলেন। পুলিশ তাদের প্রথমে আটক করে। বৈধ ভিসা না দেখাতে পারায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখানে থেকে যাওয়ার পিছনে তাঁদের আরও কোনও উদ্দেশ্য ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, বছরখানেক আগে সোনারপুর এলাকার বৈকুণ্ঠপুরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন এই ৫ জন। তবে প্রতিবেশীরা তাঁদের সম্পর্কে বিশেষ কিছু কোনও দিনই জানতে পারেননি। কারণ তাঁরা নাকি কারও সঙ্গে খুব-একটা মিশতেন না। সম্প্রতি তাঁদের আচরণে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেন অনেকে। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। যে বাড়িতে তাঁরা ভাড়া থাকতেন সেই বাড়ির মালিক পলাতক।
এর আগে গতকাল উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থেকে ২ বাংলাদেশিকে ধরেছিল পুলিশ। তাদের মধ্যে এক ধৃতের নাম নুরুল ইসলাম। তবে এখানে তিনি নাম বদলে নারায়ণ অধিকারী হয়েছিলেন। আর তাঁর বাবার নাম গিয়াস মিঞা বদলে হয় নগেন অধিকারী। নুরুল আদতে গাজিপুর জেলার বাসিন্দা। দক্ষিণ কাজিপাড়ার বাসিন্দা শেখ রফিকুল ইসলামের বাড়িতে থাকতেন নুরুল। এই রফিকুলের আসল বাড়িও বাংলাদেশের মাদারিহাটে। সম্প্রতি এই দু’জনের সন্দেহজনক গতিবিধির খবর পেয়ে যায় পুলিশ। তারপরই ওত পেতে দু’জনকেই বামনগাছি চৌমাথা সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রফিকুল কৌশলে নুরুলকে নারায়ণ নামে জাল আধার কার্ড, প্যান কার্ড এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। সেগুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বিগত কয়েক মাসে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করতে অনেক বেশি তৎপর হয়েছে রাজ্যগুলি। বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। কদিন আগেই কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের কলিন লেন এলাকা থেকে এক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। খিদিরপুর এলাকায় গত দেড় বছর ধরে থাকছিল সে। ভারতে আসার কোনও বৈধ পাসপোর্ট তার কাছ থেকে পায়নি পুলিশ বলে সূত্রের খবর।