২১ জুলাই, রাজ্যের রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। তৃণমূল কংগ্রেস এই দিনটি শহিদ দিবস হিসেবে পালন করে থাকে ১৯৯৩ সালের পুলিশের গুলিতে নিহত কর্মীদের স্মরণে। কিন্তু এবার যখন ধর্মতলায় হাজার হাজার তৃণমূল সমর্থকের সমাবেশ শহরের রাজপথে উত্তাল, ঠিক তখনই এক ভিন্ন মঞ্চে, খড়গপুর থেকে উঠে এল বিজেপির পাল্টা বার্তা।
সোমবার সকালে খড়গপুরে বিজেপির শহিদ কর্মীদের শ্রদ্ধা জানাতে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি এবং মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তৃতায় উঠে এল একাধিক রাজনৈতিক বার্তা এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে ঘিরে কড়া কটাক্ষ।
দিলীপ ঘোষ বলেন, “তৃণমূল যাঁদের স্মরণ করে, তাঁরা আসলে কংগ্রেসের শহিদ। কিন্তু রাজনৈতিক হিংসায় যে সব বিজেপি কর্মীরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের কথা কেউ বলে না। সেই শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতেই আমাদের এই সভা।”
এরপর তিনি সরাসরি তৃণমূলের শহিদ দিবস অনুষ্ঠানকে “ডিম-ভাতের প্রোগ্রাম” বলে কটাক্ষ করেন। তাঁর কথায়, “শহিদ দিবস নয়, ওটা যেন উৎসব। খাওয়া-দাওয়া আর মজা। অথচ আমরা সত্যিকারের শহিদদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, যাঁরা তৃণমূলের হিংসার শিকার হয়েছেন।”
সেইসঙ্গে তিনি একটি বড় রাজনৈতিক ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, “এই তৃণমূলও একদিন শহিদ হয়ে যাবে। আমি মনে করি সেটা হবে ২০২৬ সালেই।” তাঁর এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
গত কয়েক মাস ধরে দিলীপ ঘোষের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে নানা জল্পনা চলছিল। তবে খড়গপুরের সভা থেকে বিজেপিতেই তাঁর স্থায়ী অবস্থান ফের স্পষ্ট করে দেন তিনি। বলেন, “আমি দলের সঙ্গে আছি, ছিলাম এবং থাকব। বিজেপিই একমাত্র বিকল্প।”
গত সপ্তাহে দিল্লিতে সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে বৈঠকের পর থেকেই তাঁকে আরও বেশি সক্রিয়ভাবে রাজনীতির ময়দানে দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দিলীপ ঘোষের এই সক্রিয়তা ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির সংগঠনকে চাঙ্গা করার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
শহিদ দিবসের দিনে তৃণমূলের শক্তি প্রদর্শনের মাঝে দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ ও ভবিষ্যদ্বাণী রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করল। এখন দেখার বিষয়, এই রাজনৈতিক বিতর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় আগামী নির্বাচনের আগে।