সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“বাংলার পুলিশ যথেষ্ট পেশাদার। তাঁরা জানেন, আইন মেনে কোথায়, কখন গুলি চালাতে হয়। অপরাধীদের রেয়াত করার প্রশ্নই নেই। দরকার হলে আবারও এনকাউন্টার হবে।” বাংলাদেশ পালাতে গিয়ে পলাতক বন্দি সাজ্জাক আলমের এনকাউন্টারে মৃত্যু নিয়ে সাফ জানিয়ে দিলেন এডিজি আইন শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম।
শনিবার সকালে বাংলাদেশ পালাতে গিয়ে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে পলাতক বন্দি সাজ্জাক আলমের। তবে বাংলায় এটাই প্রথম এনকাউন্টারের ঘটনা নয়। সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটেছে। এমন দাবি করে এডিজি আইন শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম বলেন, “আপনারা যদি ভাবেন এটা ফাস্ট ইনসিডেন্টট তাহলে ভুল। এর আগে বিধাননগরে এসটিএফের এনকাউন্টার হয়েছে। রানাঘাটের ডাকাতিতেও আমরা পিছু ধাওয়া করে দুষ্কৃতীকে মেরেছি, তারও আগে মালদহে ডাকাত দলকে এনকাউন্টার করা হয়েছে।” দার্জিলিংয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে থাকাকালীন তিনি নিজেও এনকাউন্টারে গুলি চালিয়েছিলেন বলে জানান জাভেদ।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার আদালত থেকে জেলে ফেরার সময় রাস্তায় শৌচালয় যাওয়ার নাম করে গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়ার কাছে পুলিশকে গুলি চালিয়ে পালিয়েছিল বিচারাধীন বন্দি সাজ্জাক আলম। তার গুলিতে জখম হয়েছিলেন দুই পুলিশ কর্মী নীলকান্ত সরকার ও দেবেন বৈশ্য। এরপরই বৃহস্পতিবার জেলায় পৌঁছে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাহিনীর মনোবল বাড়াতে ডিজি রাজীব পরিষ্কার জানিয়ে দেন, ‘এবার থেকে পুলিশও গুলি চালাবে। দুষ্কৃতী ২ রাউন্ড গুলি চালালে পুলিশ ৪ রাউন্ড গুলি ছুড়বে’।
ডিজির হুঁশিয়ারির পরই শনিবার সকালে জানা যায়, বাংলাদেশ সীমান্তে একাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে পলাতক বন্দির। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ওই এনকাউন্টারের বিষয়েই বিস্তারিত জানান এডিজি আইনশৃঙ্খলা।
জাভেদ শামিম জানান, গোপন সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছিল বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করছে পলাতক বন্দি। সেই মতো সীমান্তে একাধিক টিম নজরদারিতে নেমেছিল। নজর রাখা হচ্ছিল সিসিটিভিতেও। তারই ভিত্তিতে বাংলাদেশ সীমান্তে সাজ্জাকের গতিবিধি জানতে পারেন তদন্তকারীরা। এদিন সকাল সাতটা নাগাদ গোয়ালপোখর থানা এলাকার সাহাপুরে একটু সেতু দিয়ে পলাতক বন্দি পালানোর চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, “ওই টিমে আমাদের আটজন অফিসার ছিলেন। তাঁরা বারে বারে সাজ্জাককে থামতে বলেছিল। কিন্তু ও পাল্টা গুলি চালাতে চালাতে পালানোর চেষ্টা করে। তখনই পুলিশ এনকাউন্টার করতে বাধ্য হয়।”
এদিন সকাল ৭টা নাগাদ ডিআইজি রায়গঞ্জ রেঞ্জের ডিআইজি সুধীর নীলকান্তমের নেতৃত্বে শনিবার ধরে ফেলা হয় সাজ্জাদকে। আত্মসমর্পণ করতে বলা হয় তাকে। কিন্তু সেটা না করে সাজ্জাক গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলে দাবি করে পুলিশের। এরপরই পুলিশ পাল্টা গুলি চালায়। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। হাসপাতালেই মৃত্যু হয় সাজ্জাকের। তাঁর শরীরে মোট তিন জায়গায় গুলি লেগেছে বলে দাবি পুলিশের। আপাতত আইনি প্রক্রিয়া চলছে। মোট ৮ পুলিশের টিম ছিল বলে জানা গিয়েছে। তদন্তের পর আরও তথ্য সামনে আসবে বলে জানান জাভেদ শামিম।
তিনি বলেন, “পুলিশ প্রফেশনাল। অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হবে।
পুলিশের উপর আক্রমণ হলে কীভাবে ট্যাকল করতে হয তা পুলিশ জানে। ডিজি থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সকলেই প্রশিক্ষিত।”