রাহুল সিংহ মজুমদার। কলকাতা সারাদিন।
মাদকাসক্তির কারণে অনেক মানুষ কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন। কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে নেশায় জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বেড়েই চলেছে।
মাদকাসক্তি কী এবং কেন তা সমস্যা?
মাদকাসক্তি একটি ক্রনিক রিলাক্সিং ব্রেইন ডিজিজ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাদকাসক্তিকে মানসিক রোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং এর দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার সুপারিশ করেছে।
মাদক গ্রহণের পর মস্তিষ্কে রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে ব্যক্তি মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। আমেরিকান অ্যাডিকশন সেন্টারের গবেষণায় দেখা গেছে, চিকিৎসার পর ৮৫ শতাংশ ব্যক্তি এক বছরের মধ্যে পুনরায় মাদক ব্যবহার শুরু করেন।
মাদকাসক্তি থেকে মুক্তির উপায়:
দোষ স্বীকার করা: মাদক ছাড়ার আগে নিজের দোষ স্বীকার করতে হবে। মাদক ব্যবহারের কারণে মানসিক অসুস্থতা বাড়ে। নিজের খারাপ অভ্যাস স্বীকার করে তার থেকে মুক্তির পরিকল্পনা করুন।
একাকী না থাকা: মাদক ব্যবহারের প্রবল আকাঙ্ক্ষা হলে একা থাকবেন না। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। মাদকাসক্তরা একা থাকতে পছন্দ করেন, যা ক্ষতিকর।
পেশাদারের সাহায্য নেওয়া: কোনো উপায় না থাকলে পেশাদারের সাহায্য নিন। মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে থেরাপি নিন এবং পরিবারের সাহায্য চান।
নেতিবাচক চিন্তা এড়ানো: হতাশা ও বিষণ্নতার কারণে অনেকেই নেশা করা শুরু করেন, যা সমস্যা বাড়ায়। নেতিবাচক চিন্তা এড়িয়ে চলুন।
মাদক গ্রহণের কারণ চিহ্নিত করা: মানসিক চাপ, অনিয়ন্ত্রিত আবেগ, পরিবেশগত সমস্যা, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ইত্যাদি কারণে মাদকাসক্তি হতে পারে। নিজের কারণে চিহ্নিত করুন।
রুটিন পরিবর্তন: মাদক বা অ্যালকোহল ত্যাগ করতে নিজের রুটিন পরিবর্তন করুন। কার সঙ্গে সময় কাটাবেন, অবসরে কী করবেন, নতুন করে ঠিক করুন।
ব্যায়াম: মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক অ্যাডভোকেট থেরেসি জে. বোরচার্ডের মতে, নেশামুক্ত হওয়ার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো ব্যায়াম। শরীরচর্চার মাধ্যমে এন্ডোরফিন বা সুখের হরমোন নিঃসৃত হয়, যা ভালো কাজের উদ্দীপনা বাড়ায়।
মাদকের নেশা থেকে মুক্তি পেতে নিজের দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। মনোবল এবং আসক্তির সঙ্গে লড়াইয়ের মানসিকতা থাকতে হবে। এভাবে মাদকাসক্তির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।