সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
৪ হাজার ৫০০ পুলিশ থাকবে সারা শহরজুড়ে। ৩১ জানুয়ারি এবং ১ তারিখ পর্যন্ত এই সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর এবং ১ জানুয়ারি বর্ষবরণ ঘিরে কলকাতায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে কলকাতা পুলিশ কি কি ব্যবস্থা নিয়েছে সেই প্রসঙ্গে জানিয়ে দিলেন পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা। তিনি বলেন, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, চিড়িয়াখানা, তারামণ্ডল এবং যত পিকনিক স্পট আছে সব জায়গায় পুলিশ থাকবে। পর্যাপ্ত সংখ্যক মহিলা পুলিশও থাকবে। একই সঙ্গে রাতে স্পেশ্যাল টিম থাকতে চলেছে। যেখানে বেশি জমায়েত হবে, যেমন পার্কস্ট্রিট সেখানে বেশি পুলিশ থাকবে।
শনিবার লালবাজারে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনই জানাল কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। বর্ষবরণে কলকাতায় বিশেষ নজর থাকবে পার্ক স্ট্রিটের দিকে। এ ছাড়াও রাতে মা উড়ালপুলে বাইক আরোহীদের ছাড় দেওয়ার কথাও ঘোষণা করলেন মনোজ।
বর্ষবরণে শহরের নিরাপত্তা পর্যালোচনা করে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার জানান, বর্ষবরণ উপলক্ষে শহরের যেখানে যেখানে ভিড় হয়, যেমন চিড়িয়াখানা, জাদুঘর ইত্যাদি জায়গায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সকলকে আইন মেনে বর্ষবরণ উদ্যাপন করার আর্জি জানান মনোজ। তবে উৎসবের মরশুমে মহিলা এবং শিশুদের নিরাপত্তার দিকে বেশি নজর থাকবে। অসুস্থ, বয়স্ক বা অ্যাম্বুল্যান্সের যাতায়াতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা-ও পুলিশের নজর রাখবে।
বছরের এই সময়টা অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। তা প্রতিরোধেও ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। জানানো হয়েছে, ১৫টি জায়গায় স্পেশ্যাল নাকা চেকিং চলবে। টু হুইলারের জন্য মা ফ্লাইওভারে কোনও বিধিনিষেধ না থাকলেও গতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কলকাতা পুলিশের এসটিএফ টিমও তৈরি থাকবে সর্বদা।
সম্প্রতি কলকাতা তথা রাজ্য থেকে একাধিক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী গ্রেফতার হয়েছে। শুক্রবার আবার পার্কস্ট্রিট এলাকা থেকে একজন পাকড়াও হয়েছে। এই অবস্থায় বছর শেষে হোটেলগুলিতেও যে কড়াকড়ি করা হবে তা স্বাভাবিক। সেই নিয়ে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। জানানো হয়েছে, হোটেলগুলিতে যারা থাকতে আসবেন তাদের থেকে যা যা নথি চাওয়া হবে তা দেখাতে না পারলে ঢুকতে দেওয়া যাবে না।
জাল পাসপোর্ট নিয়ে আদালতে ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে কলকাতা পুলিশ। প্রকাশ্যে এসেছে, ভেরিফিকেশনের সময় পুলিশি গাফিলতির একাধিক উদাহরণ। এমন পরিস্থিতি পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় পুলিশি ভূমিকায় বদল আনছে কলকাতা পুলিশ। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে সে কথা জানালেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। আরও কড়া হচ্ছে পুলিশি ভেরিফিকেশন।
নয়া প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিটি থানায় নির্দেশিকা পাঠাচ্ছেন নগরপাল। যেখানে বলা হয়েছে, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাসপোর্ট দেওয়ার আগে সব থানার ওসিকে নোডাল অফিসারের সঙ্গে কথা বলতেই হবে। ভেরিফিকেশনের সময় ভিনরাজ্য থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অপরাধের তথ্য এবং জন্ম তারিখের সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। সতর্ক হয়ে ঠিকানা যাচাই করতে হবে। ভেরিফিকেশনের সময় পুলিশ কী ভূমিকা পালন করছে, তা খাতায় কলমে নথিবদ্ধ করতে হবে, যাতে পুলিশকে আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়তে না হয়। পাসপোর্ট আবেদনকারীর ঠিকানা যাচাই করবেন এসিপি, ডিসিপিরা। শুধু ঠিকানা যাচাই নয়, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের গোটা প্রক্রিয়াই যাচাই করতে হবে তাঁদের। যাচাই করা তথ্য জাতীয়স্তরের পোর্টালেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সিপি মনোজ ভার্মা জানিয়েছেন, “কলকাতায় যেসমস্ত বহিরাগতরা আশ্রয় নিয়েছে তাদের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে কোথায় গলদ হয়েছে, তা দেখা হচ্ছে।”