সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
রাত পোহালেই বাংলায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের জন্য গৃহীত হবে এসএসসি পরীক্ষা। তার আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যখন প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রকাশ্যে, পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হলো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া আটকানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হলো, রবিবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা চলাকালীন কেউ প্রশ্নপত্রের ছবি তোলার সুযোগ পাবেন না। কারণ, কোনও পরীক্ষার্থী মোবাইল ফোন নিয়ে হলে ঢুকতে পারবেন না। সব পরীক্ষার্থীকেই ভেন্যু ইনচার্জের কাছে মোবাইল ফোন জমা রাখতে হবে। এরপরেও কেউ যদি নজরদারদের ফাঁকি দিয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষা হলে ঢোকেন এবং প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে বাইরে কাউকে পাঠানোর চেষ্টা করেন, তাহলে সে কথা জানতে পেরে যাবেন এসএসসি আধিকারিকরা। প্রশ্নপত্রে সিকিওরিটি ফিচার থাকবে। কেউ যদি প্রশ্নপত্রের ছবি তোলেন, তা সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে। কারণ, প্রশ্নপত্রে সিকিওরিটি ফিচার থাকবে। এর ফলে কেউ ছবি তুললেই এসএসসি আধিকারিকদের কাছে খবর পৌঁছে যাবে। সব পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্র, ওএমআর শিটে আলাদা সিকিওরিটি ফিচার থাকবে।
প্রায় আট বছর পর পরীক্ষা হচ্ছে স্কুল সার্ভিস কমিশনে। ৭ সেপ্টেম্বর, রবিবার রয়েছে সেই প্রতীক্ষিত পরীক্ষা। নবম ও দশমের নিয়োগ পরীক্ষা রয়েছে এদিন। তার আগে পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে সব তথ্য জানানো হল এসএসসি-র তরফে।
শনিবার এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন, পরীক্ষায় নিরাপত্তা বজায় রাখতে কী কী করছে এসএসসি।
এসএসসি-র তরফে যে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে: ২০২৫-এর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার। ৭ সেপ্টেম্বর পরীক্ষায় বসবে ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৯১৯ জন। ১৪ তারিখে পরীক্ষা দেবে ২ লক্ষ ৪৬ হাজার প্রার্থী। ৭ সেপ্টেম্বর মোট পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ৬৩৬। প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছিল। এরপর আদালতের নির্দেশেই ফের নতুন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে কমিশন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, এঁদের কেউই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না।
১৪ তারিখ থাকবে ৪৭৮টি পরীক্ষাকেন্দ্র। পরীক্ষার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রাথমিক তল্লাশি হবে পরীক্ষার্থীদের। অবশ্যই অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে যেতে হবে। অ্যাডমিট কার্ডে স্ক্যানার থাকবে।
অ্যাডমিট কার্ড আসল ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা কি না, সেটাও বোঝা যাবে। যার অ্যাডমিটে কোনও সমস্যা আছে, ছবি বা সই-তে কোনও অস্পষ্টতা আছে, তাদের পরীক্ষা যাতে বাতিল না হয়, তার অরিজিনাল সেল্ফ অ্যাটেস্ট করা আইডি কার্ডের জেরক্স কপি নিয়ে যেতে হবে।
এমনই ফিচার থাকছে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্র ও ওএমআর শিটে আলাদা আলাদা সিকিউরিটি ফিচার থাকবে। ভেন্যু ইনচার্জের কাছে সবাইকে মোবাইল ফোন জমা রাখতে হবে। দুপুর ১২টার পরে আর পরীক্ষার হলে ঢোকা যাবে না।
সকাল ৮ টা থেকে কন্ট্রোল রুম কাজ করবে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকবে না। ওএমআর শিটের এক থেকে পাঁচ নম্বর জায়গা পূরণ করতেই হবে। না হলে সেটি বাতিল বলে গণ্য হবে।