শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
‘পিতৃপক্ষে কাঁচি নিয়ে বেরিয়ে জোর করে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দিয়ে ফিতে কাটার ফল মা দেখিয়েছেন কলকাতার দুর্যোগ করে।’ এভাবেই এবারের বৃষ্টি ভেজা দুর্গাপুজোর জন্য সম্পূর্ণভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত কয়েক মাস ধরেই আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা ছিল দূর্গা পুজো ভেসে যেতে পারে বৃষ্টিতে। তবে আবহাওয়া দপ্তরের সেই সমস্ত সতর্কতা বার্তা কার্যতপাত তা না দিয়েই শুভেন্দুর দাবী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেহেতু মহালয়ার আগেই পূজা মণ্ডপ উদ্বোধন করতে বেরিয়ে পড়েছিলেন তাই মা দুর্গা এভাবে কলকাতার মানুষকে শাস্তি দিচ্ছেন!
দুর্গাপুজোর উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ শানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি কলকাতার বৃষ্টি বিপর্যয় এবং জল জমার ঘটনাকে মুখ্যমন্ত্রীর পুজো উদ্বোধনের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে তিনি সরাসরি আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘পরিষ্কারভাবে আপনাদের বলছি, শনিবার দিন পিতৃপক্ষে যে তিনটে পুজো উনি উদ্বোধন করেছিলেন, তারমধ্য়ে হাতিবাগানে হিজাব পরে। সর্বশক্তিমান মা দুর্গা এই পাপ মেনে নেননি। পিতৃপক্ষে কাঁচি নিয়ে বেরিয়ে জোর করে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দিয়ে ফিতে কাটার ফল মা দেখিয়েছেন কলকাতার দুর্যোগ করে। আজ যেভাবে কানের পাশে কাপড় সরিয়ে এসেছেন। বার্তা একদম পরিষ্কার। নিজের ইচ্ছেমতো পঞ্জিকা তৈরি করবেন না।’ যদিও শুভেন্দুর এই সমালোচনার পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে কিন্তু শুভেন্দু আক্রমণ করছেন, দিল্লি-মুম্বই সুরাত ভাসার সময় কী করছিলেন আপনারা?’
এছাড়াও, শুভেন্দু অধিকারী সনাতন ধর্ম এবং দুর্গাপুজোর মাহাত্ম্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের সমালোচিত হওয়া কিছু পুরোনো মন্তব্যকেও তুলে ধরে বলেন,
‘অনেকে দুর্গাপুজোকে সাংস্কৃতিক উৎসবে পরিণত করছে। দুর্গাপুজো হবে সনাতন ধর্ম মতে। পঞ্জিকা মেনে। সেখানে সমঝোতা হবে না।’ এরপরেই মমতাকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে শুভেন্দু বলেন, একটু মুখটা সামলে চলুন। নইলে মা আছেন। উনি অনেক অসুর বধ করেছেন। এখন একটা অসুরকে খোঁচা দিচ্ছেন। আমরা চাই মা যেন সেটাকে ধ্বংস করেন।’
শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘মা দুর্গা অশুভ শক্তির বিনাশকারিণী। মা আমাদের নিশ্চয়ই সেই শক্তি দেবেন। দুর্গাপুজো হবে সনাতন ধর্ম মতে, পঞ্জিকা মেনে। সেখানে কোনো সমঝোতা হবে না।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে তাঁর কড়া মন্তব্য, ‘নিজের ইচ্ছেমতো পঞ্জিকা তৈরি করবেন না। হিন্দু ধর্মকে ‘গন্ধা ধর্ম’ (খারাপ ধর্ম) বলবেন না। মহাকুম্ভকে মৃত্যুকুম্ভ বলবেন না। একটু মুখটা সামলে চলুন। নইলে মা আছেন। উনি অনেক অসুর বধ করেছেন। এখন একটা অসুরকে খোঁচা দিচ্ছেন। আমরা চাই মা যেন সেটাকে ধ্বংস করেন।’
অন্যদিকে, মহাপঞ্চমীতে নন্দীগ্রাম ১নং এবং ২নং ব্লক বিধায়ক কার্যালয়ে নন্দীগ্রামের পুরোহিত, ক্ষৌরকার এবং লোডিং আনলোডিং কর্মীদের শুভেচ্ছা ও সেবা প্রদান করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।