সুষমা পাল মন্ডল। কলকাতা সারাদিন।
অষ্টমীর আনন্দ শেষে নবমীতেও অন্য মেজাজে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিন উত্তর কলকাতার প্রখ্যাত চালতাবাগান সার্বজনীন দুর্গোৎসবের মণ্ডপে পুজো দর্শনে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর কন্যা আজানিয়া। চলতি বছর চালতাবাগানের পুজো পা দিল ৮১ বছরে, আর তাদের এবারের থিম— “আমি বাংলায় বলছি”।
দুর্গাপুজো মানেই কোলাহল, আনন্দ আর হাজারো মানুষের ভিড়। নবমীর দুপুরে কলকাতায় হঠাৎ বৃষ্টির দাপট কিছুটা সমস্যা তৈরি করলেও, বিকেলের পর আবহাওয়া স্বাভাবিক হতেই মণ্ডপে ভিড় জমে যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে মণ্ডপে পৌঁছন এবং প্রতিমা দর্শন করেন। শিল্পীরা তাঁকে এবারের থিম ও মণ্ডপ সজ্জার বিশেষ দিকগুলো বোঝান।
চালতাবাগানের এবারের থিমে বাংলা ভাষার ইতিহাস, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং ভাষা আন্দোলনের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। মণ্ডপে জায়গা পেয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহজপাঠ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়, এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার গান ও কবিতার গুরুত্ব। এছাড়াও বাংলার মণীষীদের ছবি ও প্রতিকৃতিতেও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর আগে অষ্টমীতেও মেয়ে আজানিয়াকে নিয়ে দমদমের জপুরের একাধিক মণ্ডপে ঘুরেছিলেন তিনি। সেখানে পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের হাতে পুজোর উপহার তুলে দেন। এমনকি মেয়ে-সহ স্থানীয় শ্রমিকদের সঙ্গে ফুচকা খেয়ে পুজোর আনন্দ ভাগ করে নিয়েছিলেন তিনি।
চালতাবাগানের মণ্ডপ ঘুরে দেখার পর এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যান দক্ষিণ কলকাতার ত্রিধারা সম্মিলনী এবং ৯৫ পল্লীতে। ত্রিধারার এবারের থিম “চলো ফিরি”, যেখানে অঘোরীদের ডেরার আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। অন্যদিকে ৯৫ পল্লীর শিল্পী শক্তি শর্মার হাত ধরে তৈরি হয়েছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিতা নির্ভর থিম— “হে বঙ্গ ভাণ্ডারে”।
প্রতিমা দর্শনের পাশাপাশি অভিষেক সময় কাটান কচিকাঁচাদের সঙ্গে। পুজোর দিনগুলোতে নেতার এই অন্য রূপ—রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে উৎসব উপভোগ—মানুষের মন ছুঁয়ে যায়।
২০২৫ সালের দুর্গাপুজোয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্যান্ডেল হপিং কেবল একটি রাজনৈতিক নেতার ব্যক্তিগত আনন্দের মুহূর্ত নয়, বরং বাংলার সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের প্রতিফলনও বটে।