সুমনা মিশ্র। কলকাতা সারাদিন।
প্রতি বছরই এই ছবির দেখা মিলবেই। এবারও তার ব্য়তিক্রম হল না। মহানবমীর সন্ধ্যায় কালীঘাট মন্দিরে (Kalighat Mandir) আরতি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কাঁসর বাজিয়ে মাতৃবন্দনা করতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে। পুরোহিতের পাশে বসেই আরতি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজোর শুরু থেকেই বিভিন্ন মণ্ডপে তাঁর হাত ধরেই এবারের দুর্গাপূজোর উদ্বোধন হয়েছিল। আজ চালতাবাগানে মেয়েকে নিয়ে পুজো দেখতে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উৎসবের শেষ বেলায় মন খারাপের সুর। আজ মহানবমী। শারদোৎসবের শেষ দিন। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে উমার আরাধনা। তিথি মেনে হচ্ছে নবমীর পুজো। বেলুড় মঠেও নবমীর বিশেষ পুজো হচ্ছে। রাত পোহালেই বিষাদের দশমী। ফের এক বছরের অপেক্ষা। তার আগে শেষ মুহূর্তে পুজোর আনন্দ চেটেপুটে উপভোগ করতে সকাল থেকে মণ্ডপে-মণ্ডপে ভিড়।
উল্লেখ্য, নবমী নিশিতে কেমন থাকতে চলেছে আবহাওয়া, তারই পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সেখানকার আঞ্চলিক অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ, শক্তি বাড়িয়ে নবমীর বিকেলেই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আরও উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেটি এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে চলেছে। প্রচন্ড শক্তিশালী এই নিম্নচাপ দক্ষিণ ওড়িশার স্থলভাগে প্রবেশ করবে। শুক্রবার, অর্থাৎ একাদশীর দিন ভোররাতে এই গভীর শক্তিশালী নিম্নচাপ স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। গোপালপুর থেকে পারাদ্বীপের মাঝে এই নিম্নচাপ ওড়িশার স্থলভাগে ঢুকতে পারে। বর্তমানে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে এবং পারাদ্বীপ থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রয়েছে গভীর নিম্নচাপটি।
পুজোর শুরুতে এবছর সারা পুজোয় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তবে পুজোর দিনগুলোয় সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। কিছু জায়গায় অবশ্য বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েক পশলা ভারী বৃষ্টি হয়েছে। তবে নাগাড়ে বৃষ্টি হতে দেখা যায়নি দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। আর তাই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে ঠাকুর দেখাটা মাটি হয়। নবমীর দিনের বেলা পর্যন্ত আবহাওয়া সাংঘাতিক খারাপ হয়নি। তাই সাধারণ মানুষের পুজোর আনন্দ নষ্ট হয়নি। তবে পুজোর শেষলগ্নে এসে মায়ের বিদায়ের আগে আবহাওয়ার বিরূপ দেখতে হতে পারে ভেবে মনখারাপ আপামর বাঙালির। এবছর বৃষ্টিও হয়েছে প্রচুর। বর্ষার বৃষ্টির সঙ্গে ছিল নিম্নচাপের জেরে বর্ষণে। সব মিলিয়ে এমনিতেই দক্ষিণবঙ্গে এবং উত্তরবঙ্গে, দু জায়গাতেই পরিস্থিতি বেশ খারাপ হয়েছিল।
প্রশাসনিক কাজের ব্যস্ততার মাঝেই বই লেখা, কবিতা লেখা এমনকি গান লেখা ও সুর দেওয়ার সখ রাখেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসবের আবহে প্রতিবছরই তাঁর লেখা ও সুর করা গান প্রকাশিত হয় ৷ এ বছর মহানবমীতে মমতা তাঁর লেখা ও সুর করা গানের আত্মপ্রকাশ করলেন ৷ মহানবমীর দিন সোশাল মিডিয়ায় নতুন এই পুজোর গান প্রকাশ করলেন তিনি ৷
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীত শিল্পী ইমন চক্রবর্তী গানটি গেয়েছেন ৷ যে গানের কথা ও সুর দু’টিই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে ৷ প্রায় ছয় মিনিট দীর্ঘ এই গানের লাইন দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন ৷ তিনি লিখেছেন, “যদি থাকত একটা ছোট্ট বাগান/ তবে কলি হয়ে রোজ ফুটতাম ৷ সকলকে জানাই মহানবমীর আন্তরিক শারদ শুভেচ্ছা ৷ এই উপলক্ষে আপনাদের সবার সঙ্গে আমার লেখা ও সুর করা এবং ইমন চক্রবর্তীর গাওয়া আরও একটি পুজোর নতুন গান শেয়ার করছি ৷”