শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
‘মুখ্যমন্ত্রী চটজলদি উত্তরবঙ্গ যেতে আগ্রহী নন কেন, সেখানে ডিভিসি নামক বলির পাঁঠা নেই দোষারোপ করার জন্যে?’ এই ভাষাতেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে তীব্র আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রকৃতির রোষে পড়েছে উত্তরবঙ্গ। ভেঙে গিয়েছে ব্রিজ। ধসে গিয়েছে রাস্তাঘাট সব কিছু। আজ অর্থাৎ সোমবার সেখানে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এ দিনের তাঁর উত্তরবঙ্গ সফরকে নিশানা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, কোন বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত তা উনি বোঝেন না।
শুভেন্দু অধিকারী সোমবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখন আতঙ্ক গ্রাস করেছে। উত্তরবঙ্গ যখন ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধ্বসের কবলে, যখন বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন ও হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়হীন, সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছেন, তখন সেই সময়ে তিনি সেলিব্রিটিদের সঙ্গে কার্নিভালে নাচানাচি করছিলেন। তাঁর এই অমানবিক আচরণে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যে ক্ষুব্ধ ও বীতশ্রদ্ধ এই বাস্তবটা দেরীতে হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশেষে উপলব্ধি করেছেন।
অন্যদিকে, বিজেপি’র সাংসদ ও বিধায়করা দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় গতকাল থেকেই সাধারণ মানুষের পাশে থেকে সাধ্যমত ত্রাণ, খাবার ও সহায়তা ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ গুলির কছে পৌঁছে দিচ্ছেন। এখন নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে ও ক্রমবর্ধমান জনরোষে হতচকিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরী করার অস্ত্রটিকে বেছে নিয়েছেন— তাঁর তথাকথিত “বিশেষ সম্প্রদায়”-এর গুন্ডাদের বিজেপি নেতাদের ওপর হামলা করতে উস্কানি দিয়েছেন, যাতে তাঁরা ত্রাণ কাজে বা অন্যান্য সাহায্য মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে না পারেন। আজ মালদহ উত্তরের সাংসদ শ্রী খগেন মুর্মু নাগরাকাটায় যখন রাজ্য বিজেপির সভাপতি শ্রী শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে বন্যা-দুর্গত এলাকায় যাচ্ছিলেন তখন তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হাতে ভয়াবহ আক্রমণের শিকার হয়েছেন। ওনাকে পাথর দিয়ে মারা হয়েছে এবং ওনার মুখ ভয়ানকভাবে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।
অপর দিকে বিধায়ক ডঃ শঙ্কর ঘোষের গাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে, ওনার গোটা শরীরে কাঁচের ছোটো ছোটো টুকরো ঢুকে গিয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় এই হামলা পুলিশের উপস্থিতিতেই হল, অথচ পুলিশ নির্বিকারভাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় — বিজেপিকে এই ভাবে ভয় দেখিয়ে থামানো যাবে না। আপনার ভয় ও তোষণের রাজনীতি বাংলার জনগণের ঐক্য ও সাহসের কাছে পরাস্ত হবে।’
এরপর তিনি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিয়ো পোস্ট করে লিখেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী চটজলদি উত্তরবঙ্গ যেতে আগ্রহী নন কেন, সেখানে ডিভিসি নামক বলির পাঁঠা নেই দোষারোপ করার জন্যে? নাকি ওখানে গিয়েও চিন, ভূটান, নেপালের ‘বহিরাগত জল’-এর তত্ত্ব দেবেন?’ বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খালি অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপান। কখনও তিনি ডিভিসিকে টার্গেট করে, কখনও আবার সিইএসসি কখনও বিহার ও উত্তরপ্রদেশ।