শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
‘ত্রাণ দিতে যাওয়া সাংসদকে মেরে তার চোখের হাড় ভেঙে দিল। বাংলায় তো গুন্ডাদের রাজ চলছে।’ এভাবেই মঙ্গলবার বন্যা বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গের মিরিকে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার মিরিকের সৌরিণীর এক গ্রামে পৌঁছলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে দাঁড়িয়ে সোমবার নাগরাকাটায় সাংসদ-বিধায়কের ওপর হামলার ঘটনায় এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু বলেন, ‘ত্রাণ দিতে যাওয়া সাংসদকে মেরে তার চোখের হাড় ভেঙে দিল। বাংলায় তো গুন্ডাদের রাজ চলছে। সেই সঙ্গে এই মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ গণতন্ত্রের পক্ষে, শান্তির পক্ষে বিপজ্জনক। কারণ, এতবড় হামলার পরও তিনি নিন্দা করেননি, গ্রেফতারের নির্দেশ দেননি। আমি তো খবর পেয়েছি, উদয়ন গুহকে ভাল করে আতিথেয়তা করা হয়েছে।’
এদিন দুপুরে বিধ্বস্ত মিরিকের সৌরিণীতে পৌঁছন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দলের তরফে বিধ্বস্ত এলাকার মানুষের হাতে ত্রাণও পৌঁছে দেওয়া হয়। শনিবার রাতের দুর্যোগে সৌরিণী গ্রামের বেশ কিছু ঘর, বাড়ি ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, রবিবার এই গ্রামের একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে ভয়াবহ দুর্যোগে। এদিন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
শুভেন্দুর অভিযোগ, হামলার পর প্রায় ২৪ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হতে চলল, অথচ এফআইআর দায়ের হওয়া সত্ত্বেও এখনও একজনকে গ্রেফতার করা হয়নি। এ ব্যাপারে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন এবং শাসকদলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিরোধী দলনেতা এও বলেন, ‘পুরো বিষয়টির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীও অবগত রয়েছেন। অপরাধীদের গ্রেফতার করার জন্য যা যা করা দরকার করব।’
এ ব্যাপারে রাজ্য প্রশাসনকে এবার আল্টিমেটাম দিলেন বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর কথায়, ‘এনাজ ইজ এনাফ। রাজ্য প্রশাসন ২৪ ঘণ্টা পরেও অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেফতার করেনি। বিকেল অব্দি দেখব, তারপরও যদি পুলিশ প্রশাসনের টনক না নড়ে তাহলে কলকাতা হাইকোর্টের মামলা করব। আইনি পথেই যেভাবে যা মোকাবিলা করতে হয় তা করব আমরা।’ মমতাকে তীব্র আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, ‘বাংলায় গুন্ডাদের রাজ চলছে। সেই সঙ্গে এই মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ গণতন্ত্রের পক্ষে, শান্তির পক্ষে বিপজ্জনক। কারণ, এতবড় হামলার পরও তিনি নিন্দা করেননি, গ্রেফতারের নির্দেশ দেননি। আমি তো খবর পেয়েছি, উদয়ন গুহকে ভাল করে আতিথেয়তা করা হয়েছে।’
এদিন বিরোধী দলনেতা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে বলেন, এই সময়টা রাজনীতি করার নয়। প্রয়োজনে একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘এখন তো কেউ পতাকা নিয়ে যাচ্ছে না। ওঁরা মাঝখান থেকে খগেন মুর্মু, শঙ্করের উপর হামলা চালালেন কেন!’ এই হামলার ঘটনা ক্যামেরায় ধরা পড়লেও গ্রেফতারি শূন্য, যা ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।